নিশ সাইটের জন্যে কতো শব্দের আর্টিকেল দিতে হবে?

​গুগলে ভালো র‍্যাংক করার জন্যে লিংক বিল্ডিং এর চাইতেও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন পেইজ এসইও। এখানে ভুল-ভ্রান্তি থাকলে, কোন বিষয়ের ঘাটতি থাকলে কয়েক টন লিংক বিল্ডিং করেও সাইটকে গুগলে ভালো র‍্যাংক করানো সম্ভবপর হবে না।

কিন্তু সঠিক অন-পেইজ এসইওর মাধ্যমে সরাসরি নির্দিষ্ট কোন আর্টিকেলে লিংক বিল্ড করা ছাড়াও ভালো র‍্যাংক করতে পারে।

এটি থেকেই নিশ্চিতভাবে বোঝা যায় সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এর জন্যে অন পেইজ এসইওর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। আর অন পেইজ এসইও বলতে মূলত আর্টিকেল টাকেই অপ্টিমাইজ করাকে বোঝায়। সে হিসেবে আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্যও একটা দারুণ ভূমিকা পালন করে।

যেহেতু বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য র‍্যাংকিং এ ভূমিকা রাখে বলে জেনেছি, তাই সবসময়েই ধরে নেই কম্পিটিটর যারা আছে তাদের থেকে বেশি শব্দ দিতে পারলেই আমি এডভান্টেজ পাবো।

কথাটার সত্যতা আছে। তবে গৎবাঁধাভাবে বলে দেয়া যায় না। আরও অনেক বিষয় ভাবার আছে। এইসকল বিষয়ের উপর চিন্তা-ভাবনা করেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঠিক কতো শব্দের আর্টিকেল দিতে হবে। 

একে একে সবগুলো বিষয়ই তুলে ধরছি।

কম্পিটিটর এর আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্য 

​​আপনার আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্য নির্ধারণের আগে প্রথমেই জেনে নিতে হবে আপনার সাথে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তাদের আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্য কেমন।

​সেটা জানতে প্রথমেই এই ওয়েবসাইটে যান

আপনার কিওয়ার্ড দিয়ে গুগল সার্চ করে প্রথম ১০ এ যারা র‍্যাংক করে আছে তাদের প্রত্যেকটি সাইট একে একে টুলের মধ্যে দিয়ে তাদের আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্য জেনে নিন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ২-৫ হাজার শব্দের আর্টিকেল আপনি লক্ষ্য করবেন। ৩ হাজারের উপরে থাকা আর্টিকেলগুলোর লিংক ব্রাউজারে ভিন্ন ট্যাবে ওপেন করে রাখুন। এবার প্রথম থেকে পড়া শুরু করুন, কয়েক টা প্যারাগ্রাফ পড়ে বাকি অংশেও চোখ বুলিয়ে যান একটু একটু করে। যদি দেখেন লেখার মান আসলেই ভালো, তাহলে নিশ্চিত ভাবে তার থেকে বড় আর্টিকেল আপনাকে দিতে হবে মান নিশ্চিত করে।

আর যদি দেখেন আর্টিকেল এর মান আহামরি না বা খুবই সাদামাটা এবং আর্টিকেলটা ১-৩ এও নেই র‍্যাংকে তাহলে সেটার আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্যকে গুরুত্ব দেয়ার দরকার নেই। বাকি যে আর্টিকেলগুলো আছে তাদের চাইতে বড় দিলেই হবে।  

অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি দৈর্ঘ্য হলেই সবসময় তাকে প্রায়োরিটি দিয়ে তার চাইতে বড় আর্টিকেল দিতে হবে এমন না। তার আর্টিকেল কেমন সেটা দেখতে হবে।

কম্পিটিটর এর আর্টিকেলের মান

কম্পিটিটর এর আর্টিকেলের মানও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ধরুণ আপনার কম্পিটিটর হিসেবে আছে বেশ বড় একটা এজেন্সি। তাদের বিশাল বাজেট এবং সে কারণে তারা বিষয়ভিত্তিক এক্সপার্টদের দিয়ে লিখিয়েছে।

এমতাবস্থায় তার ১৫০০ শব্দের আর্টিকেলও আর দশটা ৩ হাজার শব্দের আর্টিকেলকে টেক্কা দিয়ে দিতে পারবে।

আপনার আমার ক্ষেত্রে যেহেতু অধিকাংশ সময়েই বিষয়ভিত্তিক এক্সপার্ট দিয়ে লেখানো সম্ভব না তাই কম্পিটিটর এর আর্টিকেল এর থেকে দেড় গুণ বা দুই গুণ বড় আর্টিকেল দিতে পারেন। কম্পিটিটর আর্টিকেল কে যেভাবে কভার করেছে তার চাইতেও বেশি তথ্য উপাত্ত দিয়ে সেটাকে দীর্ঘায়িত করতে পারেন।

অর্থাৎ কম্পিটিটর কঠিন হলে তাদের চাইতে কিছু বড় আর্টিকেল দিলেই পার পাবেন এমন না, সেক্ষেত্রে তাদের চাইতে আরও অনেক বড় এবং তথ্য বহুল আর্টিকেল দিতে হবে। 

​বিষয়ের চাহিদা

যদি আপনার কম্পিটিটর দের মধ্যে কেউ ই ২০০০ শব্দের বেশি আর্টিকেল না দেয় এর মানে কিন্তু এই হবে না যে আপনি ২৫০০ শব্দের আর্টিকেল দিলেই হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকেই আছে অযথা টপিক দিয়ে আর্টিকেলকে চুইংগামের মতো টেনে বড় করতে চান। সেটা করা যায় তবে বিষয়ের চাহিদার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। 

​যে বিষয়ে আর্টিকেল দিচ্ছেন সে বিষয়ে জনগণ আর কি চায় সেটাও পূরণ করা উচিৎ আর্টিকেলে। যেমন ধরুণ আপনি আলু প্রোমোট করবেন। 

আলু? :P

আপনার প্রতিদ্বন্দিরা সবাই শুধু আলু রিভিউ করে গেছে এবং একটা বায়িং গাইড দিয়েছে। অথচ আপনি খুঁজে পেলেন যে আপনার সম্ভাব্য ক্রেতারা আলু কেনার আগে অনেকেই দ্বিধায় ভুগেন যে তারা ডায়মন্ড আলু কিনবে নাকি দো হাজারী আলু কিনবে। যেহেতু ক্রেতাগণ দ্বিধায় পরেই এই বিষয়ে জানতে চান তাই এটাও প্রডাক্ট কেনার একটা প্রি-স্টেজ।

এক্ষেত্রে যদি আপনি একটা কম্প্যারিজন দিয়ে দেন যে কোনটা ভালো আর কেনো ভালো তাহলে কিন্তু আপনার আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য এমনিতেই বেড়ে যাবে।

অর্থাৎ আপনি কম্পিটিটরকে দেখেই মনে মনে আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন না। আপনাকে উপরের বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিয়ে এরপর সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কেউ ১০ হাজার শব্দের আর্টিকেল দিয়েছে মানেই আমাকে চুইংগামের মতো বড় করে ১২ হাজার দিতে হবে এমনও ভাববেন না, তার আর্টিকেল এর মান কেমন, মূল বিষয়কেই অযথা ফিলার শব্দ দিয়ে বড় করেছে কিনা, টপিকের বাইরে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের অবতারণা করে বড় করেছে কিনা সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। সেরকম হলে তার ওয়ার্ড কাউন্ট যতো বড়ই হোক, গণায় ধরার দরকার নেই।

​তবে চেষ্টা করবেন যেন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীরা যে মানের এবং যে ধরণের আর্টিকেল দিয়েছে তার চাইতে অন্তত ১০০০/১৫০০ শব্দ বেশি দেয়ার জন্যে এবং তার চাইতেও ভালো মান নিশ্চিত করার জন্যে।

আশা করি এবার সঠিকভাবেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনার আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য কেমন হবে। আর তাও যদি না পারেন তাহলে -

মুরগী ড্যান্স
Ariful Islam Palash
 

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। টুকটাক লেখালেখির পাশাপাশি বই পড়া, নতুন জিনিস জানার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে তার। ব্যবসার প্রতি মনের টান রয়েছে, ভবিষ্যতে দেশের অন্যতম একজন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় নিজেকে। প্রয়োজনে ফেসবুকে পলাশ এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। :)