নিশ সাইট শুরুর পর কি ধরণের ব্যাকলিংক করবো?
নিশ সাইট শুরু করার পর কি ধরণের ব্যাকলিংক করবেন, এ নিয়ে সবাই কম বেশি চিন্তিত থাকেন। আর বেশি চিন্তিত থাকেন নতুনরা। এতো শত লিংক বিল্ডিং মেথড এর মধ্যে কোনটা দিয়ে শুরু করবেন আর কেনই বা শুরু করবেন সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই সময় চলে যায়। উদ্বিগ্ন থাকেন সবসময় ভুল কিছু করে ফেললেন কিনা।
এই আর্টিকেল লিংক বিল্ডিং এর কোন পুর্নাংগ গাইডলাইন না। একইসাথে কিভাবে কোন লিংক বিল্ড করবেন সেরকম কোন গাইডও না। এখানে উল্লেখিত সব বিষয়েই আপনি গুগল করলে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।
আমি শুধু আপনাকে গাইড করবো কি ধরণের লিঙ্ক বিল্ড দিয়ে শুরু করবেন এবং এরপর কোনটা কন্টিনিউ করতে থাকবেন।
ধরে নিচ্ছি আপনি আজকেই মাত্র একটা নতুন ডোমেইন রেজিস্টার করলেন। এমন অবস্থায় আসলে কোন লিংক বিল্ড করার ব্যাপারে আপনাকে ভাবতে হবেনা। প্রাথমিক কাজ হিসেবে আপনি ৮-১০টা আর্টিকেল দিয়ে ফেলুন।
তবে আর্টিকেলের ব্যাপারে এখানেই থেমে যাওয়া নয়। অন্তত ৩০-৪০টা আর্টিকেল দরকার। সেগুলো ধীরে ধীরে তৈরী করতে থাকুন।
প্রাথমিক আর্টিকেলগুলো দেয়া হয়ে গেলে এবার আপনার লিংক বিল্ডিং ক্যাম্পেইন শুরু করার পালা। আমি যা বলবো সেটাই আদর্শ, এর ব্যতিক্রম করা যাবেনা, এমন না। আপনি চাইলে আপনার মতো করেও করতে পারেন। আমি শুধু একটা গাইড লাইন দেয়ার চেষ্টা করবো কিভাবে করলে সুবিধা।
সোশাল ব্যাকলিংক
নিশ সাইটের জন্যে পপুলার সোশাল মিডিয়াগুলোতে পেইজ, একাউন্ট ইত্যাদি যা করা যায় করে নিন। এগুলো সাধারণত পাবলিক থাকে, অর্থাৎ যেকেউ যদি সেই সোশাল মিডিয়াতে একাউন্ট না থাকে তাও ভিজিট করতে পারবে।
যেহেতু যেকেউ পারবে তাই গুগল বটও পারবে বলেই ধরে নিলাম।
ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি সাইটে আপনার ওয়েবসাইট ইউ আর এল এর জায়গায় নিশ সাইটের ইউ আর এল দিয়ে দিলে সেখান থেকে সোশাল ব্যাকলিংক পাবে। এসব ব্যাকলিংক খুব যে পাওয়ারফুল এমন না। নতুন সাইটের জন্যে প্রাথমিক ব্যাকলিংক হিসেবে এগুলো করাই যৌক্তিক।
আর যেহেতু পেইজ/একাউন্ট তৈরি করা হচ্ছেই, তাই এতিম করে না রেখে, পর্যাপ্ত ছবি, কন্টেন্ট ইত্যাদি দিয়ে নিয়মিত আপডেট করতে পারেন।
এক্ষেত্রে একাউন্টগুলোকে নিয়মিত আপডেট করার বিষয়টি অটোমেট করতে পারেন IFTTT দিয়ে। এই পদ্ধতি ফলো করলে আপনার প্রতিটা নতুন আর্টিকেল পাবলিশ হওয়ার সাথে সাথেই সেগুলোতে অটোমেটিকভাবে আপনি সোশাল ব্যাকলিংক পেয়ে যাবেন। চমৎকার না?
ব্লগ কমেন্ট
অনেকের কাছেই বিতর্কিত হতে পারে ব্লগ কমেন্টিং এর বিষয়টি। তবে এবিউজ না করে পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করলে বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
যদি আপনি ব্লগ কমেন্টিং করতে চান, তাহলে অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া ম্যানুয়ালি করতে হবে। যদি নিজে না পারেন, তবে ইংরেজি জানে এমন কাউকে শিখিয়ে তাকে দিয়ে করিয়ে নিলে উপকার পাবেন। কোনভাবেই ফাইভার থেকে বা কোন ফোরাম থেকে এরকম সার্ভিস নেয়া যাবেনা। এরা সাধারণত সফটওয়্যার ব্যবহার করে স্পিন করা লেখা দিয়ে ব্লগ কমেন্টিং করে।
আর এগুলো সার্ভিসে এমন এমন সাইটে কমেন্ট করে যেগুলো খুবই বাজে ভাবে স্প্যামাররা এবিউজ করেছে ইতোমধ্যেই। ফলাফল – আপনার সাইটের জন্যে উপকারের চাইতে অপকার বেশি হবে।
প্রাথমিক ভাবে আপনার সাইটের অথোর প্রোফাইল যে নামে, সেই নাম দিয়েই ৩০-৪০টা ব্লগ কমেন্ট লিংক ম্যানেজ করতে হবে। হতে পারে ৬০-৭০টা বা ক্ষেত্রবিশেষে ১০০টা করে এরকম ৩০-৪০টা লিংক পাওয়া যেতে পারে নতুন হিসেবে।
শীঘ্রই ব্লগ কমেন্টিং এর উপর একটি পূর্নাংগ গাইডলাইন দিবো ইনশাআল্লাহ।
ভিডিও/অডিও শেয়ারিং সাইট
ইউটিউব, ডেইলিমোশনসহ প্রথম শ্রেনীর কিছু ভিডিও শেয়ারিং সাইটে আপনি একটা ২-৩ মিনিটের ভয়েস সহ ভিডিও তৈরি করে আপলোড করবেন। এরপর সেখানে ডেস্ক্রিপশনে ৫০-১০০ ওয়ার্ডের কন্টেন্ট দিয়ে আপনার সাইটের লিংক দিয়ে সেখান থেকে লিংক নিতে পারেন।
এবার ভিডিও থেকে অডিও আলাদা করে সেটা সাউন্ডক্লাউড, অডিওম্যাক ইত্যাদি সাইটে আপলোড করে সেখান থেকে লিংক নিতে পারেন।
এগুলো ইফেক্টিভ কোন লিংক না, কিন্তু প্রাথমিক লিংক হিসেবে আপনার লিংক প্রোফাইল ডাইভার্সিফাই করতে সাহায্য করবে।
ফোরাম সাইট
গতানুগতিক যে ফোরাম ব্যাকলিংক নিয়ে মানুষ আলোচনা করে থাকে, সেরকম না। সেটা থেকে কিছুটা ভিন্ন। ফোরামে প্রোফাইল করে সেখান থেকে লিংক নিয়ে খুব একটা ফায়দা হবেনা।
এর চাইতে আপনার নিশ রিলেটেড বেশ কিছু ফোরাম খুজে বের করুন। সেখানে একাউন্ট করে বেশ কিছু দিন এক্টিভ থাকুন, হেল্পফুল কমেন্ট করুন, বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসা করে পোস্ট করুন। এঙ্গেইজমেন্ট বাড়ান।
এরপর পপুলার কোনো প্রশ্নের থ্রেডের উপর আর্টিকেল বানিয়ে সেই আর্টিকেলের লিংক ৫০-১০০ ওয়ার্ডের কমেন্ট করে শেয়ার করুন। ট্রাফিকও পাবেন, লিংকও পাবেন।
এরকম ৫-১০টা লিংক থাকলে উপকার পাবেন।
গেস্ট পোস্ট
আগের লিংকগুলো করতে ধরলাম আপনার ১ মাসের মতো সময় লাগলো। আর ইতোমধ্যেই আপনার ম্যাক্সিমাম আর্টিকেল দেয়া হয়ে যাচ্ছে। এবার আপনি গেস্ট পোস্ট করা শুরু করুন। আপনি নতুন হিসেবে যে ধরণের লিংক করতে পারবেন, তার মধ্যে গেস্ট পোস্টই সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিভ হবে এবং আর্টিকেল র্যাংক করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এক্ষেত্রে লিংক ভেলোসিটি একটু বজায় রাখবেন। এক মাসেই ২০-৩০টা ভালো মানের গেস্ট পোস্ট করে পরের মাসে একেবারেই না করার চাইতে, প্রথম মাসে ৫ টা, এরপর ৪-৫টা, এরপর ৫-৭টা করে করা অনেক ভালো। তাড়াহুড়ার দরকার নাই। আল্লাহর উপর ভরসা করে ধীরে ধীরে করতে থাকুন।
ব্যাস এবার এভাবেই লিংক বিল্ডিং চলতে থাকুক গেস্ট পোস্টের উপর। আরও অনেক লিংক বিল্ডিং মেথড আছে, যেগুল আলোচনা করা যেতে পারতো। যেমন – গেস্টোগ্রাফিক্স, ব্রোকেন লিংক বিল্ডিং ইত্যাদি। নতুনদের জন্যে এগুলো তেমন ইফেক্টিভ স্ট্র্যাটেজি না।
অযথা সেগুলো করতে গিয়ে মনোবল নষ্ট হবে। তবে দিন যতো যাবে, ততোই অভিজ্ঞতা বাড়বে। নিত্য নতুন পদ্ধতি আয়ত্ব করতে পারবেন। আর্টিকেলে উল্লেখিত পদ্ধতি বাদে বাকি পদ্ধতি গুলো পরের কখনোর জন্যেই তোলা থাকুক।
আপনার যেকোনো জিজ্ঞাসা নিচে কমেন্ট বক্সে করতে পারেন। আমি উত্তর দিবো সময় করে।