কিভাবে বুঝবো আর্টিকেল এর গুণগত মান কেমন?
অনেকগুলো কমন প্রশ্নের মধ্যে এটি একটি। অনেকেই আর্টিকেল নেয়ার পরে সেটার মান কেমন সেটা চেক করতে দেয় আমাকে। অনেককে চেক করে দেই, কিন্তু গভীরভাবে চেক করে দেয়া কখনোই সম্ভব না।
It takes time…
আপনি যখন আর্টিকেল নিবেন, সেটা চেক করার জন্যে যে যোগ্যতা সেটা আপনার থাকতে হবে। আমি চেক করে দিলে হয়তো ২-৩ মিনিটে শুধু একটু চোখ বুলিয়ে দিতে পারবো।
এর বেশি কিছু না।
এর মধ্যে কোন ভুল ধরা পড়লে আপনাকে বলবো, আর যদি অনেক কিছু দৃষ্টির অগোচরে থেকে যায় সেক্ষেত্রে আমার আর কিছু করার থাকবেনা।
বিস্তারিত আপনাকেই দেখে নিতে হবে।
অনেকে কাজটা নিজেই শিখতে চান, তাই জিজ্ঞেস করেন কিভাবে আর্টিকেল এর মান চেক করবো, আপনার কোন চেকলিস্ট আছে কিনা।
উত্তর হচ্ছে – না, আমার কোন চেকলিস্ট নেই।
আমি কিভাবে আর্টিকেল চেক করি?
পুরো আর্টিকেল পড়তে হবে - নতুন রাইটার থেকে আর্টিকেল নেয়ার সময় আমি একদম প্রথম থেকে শেষ অবধি পুরো আর্টিকেলটা পড়ি। পড়া ছাড়া কখনোই আর্টিকেল এর কোয়ালিটি বোঝা সম্ভব না।
আর পড়ে আর্টিকেল এর মান বুঝতে পারতে হবে আপনাকে। ইংরেজিতে দূর্বলতা আছে, তাই পড়ে বুঝতে পারেন না – ঠিক আছে। কিন্তু চেষ্টা তো করতে হবে।
ব্যবসা হিসেবে ভাবুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কে। ইংরেজিতে আপনার দূর্বলতা এটা যেহেতু বুঝতে পারছেন, এটাকে ইম্প্রুভমেন্ট করার জন্যে প্রয়োজনীয় কাজও আপনাকেই করতে হবে।
আপনি যদি নিজে ইম্প্রুভ করার চেষ্টা না করেন, কোন যাদুর জ্বিন এসে আপনাকে এটা বুঝিয়ে দিয়ে যাবেনা।
আর আপনি যদি চেষ্টা নাই করেন, তাহলে ধরে নিবেন আপনি মার্কেটার হওয়ার যোগ্য এখনও হতে পারেন নি।
একবার ভাবুন, যুদ্ধের ময়দানে আপনি। আপনার প্রতিপক্ষের কাছে ঢাল-তরোয়ার সব আছে। আর আপনার আছে শুধু তরোয়ার। তরোয়ার দিয়ে আপনি আঘাত করতে পারবেন, কিন্তু পালটা আঘাত কেউ করলে সেটা রুখতে পারবেন না।
অর্থাৎ ইংরেজিতে দূর্বলতা মানে আপনি ঢাল বিহীন যোদ্ধা।
আমি যেহেতু পড়েই আর্টিকেল এর ভালো-মন্দ বুঝি, তাই আপনাকেও সেভাবেই বুঝতে হবে।
রাইটার বেশ পুরোনো হয়ে গেলে তখন তার পুরোটা পরার দরকার নেই, আপনি অলরেডি জানেন সে কেমন লিখে, আর আগে যা ভুল করতো সেগুলো আপনি জানিয়ে দেয়ায় সে ভুলগুলো আর করবেনা।
গ্রামার চেকার – ম্যানুয়ালি পুরো আর্টিকেল এর গ্রামার আর বানান চেক করা দুরূহ ব্যাপার। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে নাহয় বানান চেক করা গেলো, কিন্তু গ্রামার?
খুব প্যারা, তাইনা?
গ্রামার চেক করার জন্যে আমি গ্রামারলি ইউজ করি। প্রিমিয়াম টা অনেক বেশি ফিচার সমৃদ্ধ, তাই সেটা দিয়ে চেক করার পর গ্রামাটিকাল মিস্টেক আর থাকার কথা না।
আপনি প্রথম প্রথম শুরু করলে পেইড ভার্সন কেনাটা আপনার জন্যে কষ্টসাধ্য হয়ে যেতে পারে। তাই ফ্রি ভার্সন দিয়েই বেসিক গ্রামার চেক করে কারেকশন করে নিতে পারেন।
গ্রামারলি তে অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন এই লিঙ্ক থেকে।
এছাড়া হোয়াইটস্মোক নামে আরেকটা ডেস্কটপ সফটওয়্যার আছে। সেটাও দেখতে পারেন। গ্রামারলির মতো এতো বেশি পপুলারিটি না পেলেও মার্কেটে অনেক আগে থেকেই আছে এরা।
এছাড়া জিঞ্জার, আফটার দ্য ডেডলাইন ইত্যাদি আরও টুলস আছে গ্রামার চেক করার জন্যে।
নতুনরা ফ্রি গুলো দিয়েই অনায়াসে কাজ চালাতে পারবেন।
আর্টিকেল কপি করা/স্পিন করা কিনা কিভাবে বুঝি?

কোন আর্টিকেল প্ল্যাজারাইজড কিনা বা কপি করা কিনা সেটা দেখার জন্যে আমি কপিস্কেপ প্রিমিয়াম ব্যবহার করি।
এটা খুবই সস্তা টুল। ২০০ প্রিমিয়াম সার্চের জন্যে আপনার খরচ হুবে মাত্র ১০ ডলার। তো এতো সস্তা টুল না নেয়ার কোন মানেই হয়না।
এছাড়া গ্রামারলি প্রিমিয়াম দিয়েও চেক করা যায়, কিন্তু আমার কাছে এর প্ল্যাজারিজম চেক করার ক্যাপাবিলিটি এখনো খুব বেশি ভালো মনে হয়নি। তাই ওল্ড স্কুল কপিস্কেপ এই আছি।
স্মলএসইওটুলস এরও প্ল্যাজারিজম চেকার আছে, সেটার ব্যবহার করতে পারেন। তবে এটা মাঝে মাঝে ভুল ইনফোরমেশন দেখায়। এক্ষেত্রে ডাবল চেক করে নেয়া ভালো।
আর যদি কোন টুল ব্যবহার না করতে চান, তাহলে শুধু গুগলকে ব্যবহার করেই আর্টিকেল চেক করা যায়।
আর্টিকেলের ১-২লাইন কপি করে “কমা কোটেশন” এর ভিতর এভাবে করে দিয়ে এরপর গুগলে সার্চ করতে হবে। হুবহু সেইম বাক্যসহ রেজাল্ট দেখালে বুঝতে হবে কপি কন্টেন্ট। এভাবে আর্টিকেলের বিভিন্ন অংশ থেকে কয়েক লাইন কপি করে এনে সার্চ করলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে আর্টিকেল কপি করা কিনা।
এতো গেলো কপি কন্টেন্ট এর কথা। আর্টিকেল স্পিন করা কিনা কিভাবে বুঝবো?
নিজে পড়ে বুঝা ছাড়া আমার কাছে স্পিন কন্টেন্ট চেক করার কোন উপায় জানা নেই। আর্টিকেল পড়লেই দেখা যায় অনেক লাইন থাকবে যেগুলো কোন যৌক্তিক অর্থ প্রকাশ করেনা, শব্দের অযৌক্তিক ব্যবহার ইত্যাদি। নতুন হিসেবে বুঝতে সময় লাগবে এটা।
আর্টিকেল অভার/আন্ডার অপ্টিমাইজড কিনা কিভাবে বুঝবো?
আমি সাধারণত এরকম আর্টিকেল পাইনা। আমি আমার ইন্সট্রাকশনে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করে দিতাম আমি কোন এসইও আর্টিকেল চাচ্ছিনা এবং কিভাবে কি চাচ্ছি।
তাই আন্ডার অপ্টিমাইজড বা অভার অপ্টিমাইজড আর্টিকেল আমি পাইনা।
অভার অপ্টিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে দেখবেন ঘন ঘন অযৌক্তিকভাবে মূল কিওয়ার্ড বার বার ব্যবহার করেছে। প্রোডাক্টের নাম বারবার দিয়েছে।
আর আন্ডার অপ্টিমাইজড আর্টিকেলে দেখবেন মূল কিওয়ার্ড দেয়ইনি কিংবা কয়েকবার দিয়েছে মাত্র।
এখানে আর এ বিষয় দীর্ঘায়িত করবো না, এই টপিক একটা আলাদা আর্টিকেলের দাবীদার। তাকে সেটা দিয়েই সম্মানিত করা হবে ঈনশাআল্লাহ।
ইন্সট্রাকশন ফলো করেছে কিনা?
এটা নতুন রাইটার নেয়ার সময় খুবই গুরুত্বসহকারে চেক করতে হয়। রাইটার যদি আমার ইন্সট্রাকশন ভালোভাবে ফলো না করে তাহলে তাকে দিয়ে আর লেখানোর কোন মানে হয়না।
তাই, এটাও চেক করে নিতে হবে।
এক রাইটারকে দিয়ে দীর্ঘদিন লিখালে সে বুঝে যাবে আপনি আপনার আর্টিকেল কেমন চান, কিভাবে চান। তখন আর এতো কিছু চেক করতে হবেনা। তারপরেও একদম ছাড়ও দিয়ে দেয়া যাবেনা। মাঝে মাঝেই চেক করতে হবে।
প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা লাগলে তাকে জানাতে হবে।
আমার খারাপ অভিজ্ঞতা
একবার এক রাইটার দীর্ঘদিন যাবত আমাকে ভাল আর্টিকেল দিচ্ছিল, তাই সে আর্টিকেল জমা দিলে আমি চেক না করেই নিয়ে নিতাম। বেশ অনেক দিন পর কি মনে করে আর্টিকেলগুলো চেক করলাম পাবলিশ করার আগে।
পড়ার পর আমি নিশ্চিত ভাবেই বুঝেছি এটা আমার রাইটার লিখে নি। অন্য কেউ লিখেছি। এরকম প্রায় ১৫ টা আর্টিকেল দেখলাম আমি।
সরাসরি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এই আর্টিকেলগুলো কে লিখেছে? আমি নিশ্চিত তুমি লিখনি, কারণ তোমার লেখা আমি চিনি।
অগত্যা উপায় না পেয়ে সে স্বীকার করলো যে সে পড়াশোনার চাপে থাকায় অন্য রাইটারের কাছে আমার আর্টিকেলগুলো আউটসোর্স করেছিল। সে এর জন্যে ক্ষমা চাইলো। এরপর বিনা পয়সায় ১৫টা আর্টিকেলই নতুন করে নিজে লিখে দিলো।
আরেকবার এক রাইটারকে পেয়েছিলাম, সে খুবই ভালো লিখছিল। মাঝখানে কেন যেন আর তার লেখায় আগের মতো তেজ পাচ্ছিলাম না। আমি চেক করলাম তার লেখা কিছু বিষয়। সে শুধু মাত্র রিরাইট করেই আমাকে আর্টিকেল দিয়ে দেয়া শুরু করেছিল।
সফটওয়্যারের মাধ্যমে না, নিজেই করতো। এরপর আর তাকে আমি কোন কাজ দেইনি। কারণ দোষ দেখানোর পর সে কনট্যাক্ট রাখেনি আমার সাথে।
এর বাইরে আমার আর তেমন কোন খারাপ অভিজ্ঞতা নেই আর্টিকেল নিয়ে। আমি সুখে-শান্তিতে আমার রাইটিং টিম নিয়ে দিব্যি আছি। অবশ্য আগের থেকে কয়েকজন রাইটারকে কাট-ছাট করে বাদ দিয়েছি।
আর্টিকেল নিয়ে আপনার কোন খারাপ অভিজ্ঞতা আছে কি? থাকলে শেয়ার করুন কমেন্টে আমার সাথে। আমি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।