অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (পর্ব ১) – কি, কেন, কিভাবে?

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে ইংরেজিতে অনেক ভালো ভালো রিসোর্স থাকলেও বাংলায় বিনামূল্যে রিসোর্স নেই বললেই চলে। গ্রুপগুলোতে আমরা অনেকেই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশন বিষয়ক নানা আলোচনা চালালেও, দীর্ঘদিন যাবৎই একটা পূর্নাংগ বাংলা গাইডলাইনের প্রয়োজন অনুভব করছিলাম।

আমি নিশ্চিত, যারা এটা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তারাও এর একটা প্রয়োজনবোধ করছিলেন।

কিন্তু বিষয়টা খুব অল্প কথায় বোঝানো সম্ভব না, অনেক কিছু বলার আছে, অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ আছে। এ কারণে, "করবো" বলাটা সহজ হলেও "করে ফেলাটা" কঠিন। 

আজ লিখি, কাল লিখি করে লিখা আর হয়ে উঠছিলোনা।

এতো কিছু লিখতে আসলে অনেক ধৈর্য্য প্রয়োজন। অর্ধেক লিখে মাঝপথে থেমে গেলেও সমস্যা।

তো, আজকে অনেকটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছি যে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মূল যে বিষয়গুলো না জানলেই না; সেগুলো নিয়ে লিখে ফেলবো। যাতে করে নতুন যারা এই কাজে আগ্রহী, কিছুটা হলেও যেন সঠিক গাইডলাইন পায়। কোন ভুল পথে পা না বাড়ায়। পাশাপাশি যারা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশন সম্পর্কে কিছুই জানেনা, তারা একটা আর্টিকেলেই প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ধারণা যেন পেয়ে যায়। 

তাছাড়া, যারা অলরেডি কাজ করছে, তাদেরও কোথাও ধারণা কম থাকলে সেই অংশটুকুও ঝালিয়ে নিতে পারবে।

আর ভাবলাম, একটা বিশাল আর্টিকেল লিখার চাইতে কয়েকটা পর্বে ভাগ ভাগ করে লিখলে আমার জন্যেও লিখতে সুবিধা, যারা পড়বেন – তাদের জন্যেও সুবিধা।

তাই, আজকে প্রথম পর্বে আলোচনা করবো -অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে করা যায়; সেটা নিয়ে।

একদম প্রথম ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে এটা নতুনদের।

আর দেরী না করে মূল অংশে চলে যাই।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

আপনি যখন একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার, তখন অন্যের প্রডাক্ট মার্কেটিং করে বিক্রি করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি কমিশন পাবেন।

অর্থাৎ, আপনার কোন প্রডাক্ট নেই, প্রোডাক্ট আরেজনের। তার প্রডাক্ট আপনি সেল করে দিবেন, তার বিনিময়ে সেই প্রডাক্টের দামের একটা অংশ আপনাকে দেওয়া হবে।

অনলাইনে এটা খুবই পপুলার একটা সেলস স্ট্র্যাটেজি প্রডাক্টের বিক্রি বাড়ানোর জন্যে। আর এদিক থেকে পিছিয়ে নেই অ্যামাজনও। তারা তাদের সাইটে থাকা প্রডাক্টের বিক্রি বাড়ানোর জন্যে এমন একটা প্রোগ্রাম তৈরী করেছে।

যেটার নাম – অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস প্রোগ্রাম

অনলাইনের প্রথম দিককার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে এটি একটি। প্রায় এক যুগ যাবৎ তারা সফলভাবে এটি পরিচালিত করে আসছে।

সহজে আবার বললে – অ্যামাজনে কোটি কোটি প্রডাক্তের মধ্যে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী প্রডাক্ট প্রোমোট করবেন, সেল করতে পারলে সেই প্রডাক্টের দামের একটা নির্দিষ্ট অংশ পাবেন। সেই অংশ কতো সেটা নির্ভর করে আপনার বিক্রির পরিমাণের উপর।

নিচের চার্টটি দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন কতোগুলো প্রডাক্ট সেল করতে পারলে আপনার কমিশন টায়ার কতো হবে।

অ্যামাজন কমিশন রেট

আমি প্রতি মাসে গড়ে ৮.২৫% করে পাই, আল্লাহ চাইলে আগামী দিনগুলোতে এটার পরিমাণ ৮.৫% এ উপনীত হবে।

আপডেট​: সম্প্রতি অ্যামাজন তাদের ভলিউম বেসড কমিশন স্ট্রাকচার চেইঞ্জ করেছে। অর্থাৎ এখন কতোগুলো বিক্রি করা হলো তার উপর কমিশন রেট নির্ভর করছে না। ক্যাটাগরি ভেদে কমিশন স্ট্রাকচার ফিক্সড। নিচের ছবিটা দেখুনঃ 

অ্যামাজন এর নতুন রেট

অনলাইনে হাজারো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে – অ্যামাজন কেন?

অ্যামাজনের মতো এতো বেশি কালেকশনের প্রডাক্ট অনলাইনে আর কারও নেই। অর্থাৎ ওদের প্রডাক্টের সংখ্যাও বেশি, তাই প্রোমোট করার সুযোগও বেশি।

আম্যাজন এর লোগো

অ্যামাজন এর লোগোটা কখনো খেয়াল করেছেন কি? দেখুন, A থেকে Z পর্যন্ত একটি তীর দেখা যাচ্ছে। এর মানে এ থেকে জেড পর্যন্ত সব আছে তাদের কাছে।

কোটি কোটি প্রডাক্টের মধ্যে আপনার যা খুশি তা আপনি প্রমোট করে সেল করতে পারবেন। কিছু আইটেম থাকে অ্যাসোসিয়েটস আওতার বাইরে, সেগুলো ছাড়া। ঘাবড়ানোর কিছু নেই, এমন আইটেম হাতে গণা কয়েকটি মাত্র।

অ্যামাজন অনলাইনে অন্যতম বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড। এখানে কোন কিছু কেনার আগে মানুষ ঠকে যাওয়ার কথা ভাববেনা। তারা জনগণের টাকা নিয়ে কোথাও চোপাট হয়ে যাবেনা। তাই কোন প্রডাক্ট পছন্দ হলে, বাজেট মিললে জনগণ কিনে নিবে, ভাববে না।

অ্যামাজন এর সবচেয়ে বড় মজা হচ্ছে, আপনি যে প্রডাক্ট প্রমোট করছেন, শুধু সেটি বিক্রি হলেই আপনি কমিশন পাবেন এমন না। আপনি যদি মিস্টার আলুকে অ্যামাজনে পাঠান পটল কিনতে, সে পটল না কিনে যদি ঝিঙ্গা কিনে তাতেও অ্যামাজন আপনাকে কমিশন দিবে। সে যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে সারা মাসের বাজার করে তাতেও আপনাকে কমিশন দিবে।

অর্থাৎ আপনি আপনি কাউকে অ্যামাজনে পাঠালে, সে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যাই কিনুক না কেন, আপনি কমিশন পাবেন।

অ্যামাজনে কাজ করার জন্যে এর থেকে বড় কোন কারণ আর দরকার আছে? আর কে দেয় এমন বলেন? রীতিমতো মামু বাড়ির আবদার 😛

অ্যামাজনে তো কমিশন কম – তাহলে?

উপরে একটা কমিশন টায়ার এর চার্ট দিয়েছিলাম, সেখানে নিশ্চয়ই দেখেছেন যে অ্যামাজনে কমিশনের পরিমাণ কম দেওয়া হয়।

তাও কেন অ্যামাজন?

less is more

আপনি যদি একাধিক অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে কাজ করে থাকেন এবং অ্যামাজনেও কাজ করে থাকেন, তাহলেই কেবল এটা বুঝতে পারবেন। তা নাহলে বুঝানো কঠিন।

যারা অ্যামাজনে কাজ করেনা, তাদের সবারই এটা কমন অভিযোগ যে অ্যামাজনে কমিশন কম। এখানে কষ্ট করে লাভ নাই। কিন্তু, এখানে কিছু বিষয় জেনে নেয়া প্রয়োজন।

আমি একাধিক অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে কাজ করেছি। তাই আমি খুব ভাল করেই জানি যে, অ্যামাজনে কনভার্সন রেট অন্য যেকোনো সাইটের চাইতে বেশি।

মানে হচ্ছে আপনি যদি ক্লিকব্যাংক বা সিমিলার কোন মার্কেটপ্লেস এর কোন প্রডাক্ট প্রোমোট করেন, তাহলে প্রতি ১০০ জনে ১-২ জন কিনতে পারে, খুব ভালো হলে ৫-৭ জন কিনতে পারে। কয়েকশোজনেও কেউ না কিনতে পারে, এমনও হয়।

এর বেশি কনভার্সন রেট পাওয়া খুবই কঠিন।

কিন্তু ঠিকমতো কাজ করলে অ্যামাজনে ৮-১০% কনভার্সন কোন ঘটনা না। এর থেকে বেশি কনভার্সন রেটও খুবই স্বাভাবিক। আমার ১২-১৫%+ কনভার্সন থাকে প্রতি মাসে। 

তো দেখতেই পাচ্ছেন, অ্যামাজনে বেশি মানুষ কনভার্ট হয়।

আরেকটা ব্যাপার, অন্য মার্কেটপ্লেসে আপনি যে প্রডাক্ট প্রোমোট করবেন, সেটা বিক্রি হলেই কেবল কমিশন পাবেন, অন্য কিছুর জন্যে পাবেন না।

আর অ্যামাজনে আপনি যা প্রমোট করছেন, সেটা সেল হলেও কমিশন পাবেন, অন্য প্রডাক্ট সেল হলেও কমিশন পাবেন।

তো আল্টিমেটলি কমিশন কম হলেও তুলনামূলক লাভের পরিমাণটা অ্যামাজনেই সবচেয়ে বেশি।

আর ঠিক এ কারণেই, আমার মতো আপনারও সবচেয়ে পছন্দের অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম হবে এটি।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করা যায়?

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত আপনি ৩ ভাবে করতে পারেন। তবে এর মধ্যে নিশ সাইট নিয়ে কাজ করাটাই সবচেয়ে ভালো এবং তুলনামূলক বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে এতে।

নিশ সাইট

এই মডেলে আপনাকে একটা ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে, সেটা বিষয়ভিত্তিক হলে নিশ সাইট বলা যাবে। নিশ বলতে ছোট্ট ক্যাটাগরিকে বুঝায়। যেমন স্পোর্টস অ্যাণ্ড আউটডোর অনেক বড় ক্যাটাগরি হলেও ব্যাডমিন্টন একটা নিশ।

এরকম একটি বিষয়ভিত্তিক ওয়েবসাইট করে আপনি অ্যামাজনের প্রডাক্ট সেল করতে পারেন।

ব্যাডমিন্টন নিয়ে একটি নিশ সাইট করে সেখানে আর্টিকেল দিয়ে আপনি ব্যাডমিন্টন এর সাথে জড়িত সকল রকম প্রোডাক্টই সেল করতে পারবেন।

আর যদি আরেকটু ব্রড নিশ নিয়ে কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে একই রকম বা একসাথে কাজ করা যায় এমন বিষয়গুলোকে একসাথে নিতে পারেন। যেমন আপনি যদি উইন্টার স্পোর্টস নিয়ে কাজ করেন, তাহলে সেখানে শীতকালে খেলা হয় এমন সবকিছু নিয়েই কাজ করতে পারবেন।

তবে, নতুনদের জন্যে মাল্টি-নিশ নিয়ে না আগানোই ভালো। সিঙ্গেল নিশ নিয়ে কাজ করুন, ভালো সফলতা আসলে এরপর নিজের খেয়াল খুশিমতো যা করা প্রয়োজন মনে করেন করতে পারেন।

অনেকেই পুরো কাজ নিজে না শেখার কারণে, অন্যের থেকে রেডিমেইড সাইট কিনে নিতে চায়। প্রথম অবস্থায় এটা বোকামি। এ বিষয়ে আমার একটি আর্টিকেল আছে, দেখতে পারেন।

নিশ সাইটের জন্যে আপনাকে এক বা একাধিক মেইন বায়িং কিওয়ার্ড থাকতে হবে, এগুলো হবে আপনার তুরুপের তাস। মেইন কিওয়ার্ডের জন্যে সার্চ ভলিউম নূন্যতম ৭২০ হতে হবে। আপনার পুরো সাইটের ম্যাক্সিমাম আর্নিং এই কিওয়ার্ডের মাধ্যমেই হবে।

এছাড়া ৪-৫টা সেকেন্ডারি বায়িং কিওয়ার্ড থাকতে হবে। এগুলো সার্চ ভলিউম এক দেড়শো থেকে শুরু করে উপরে যা খুশি হতে পারে।

কিছু ইন্ডিভিজ্যুয়াল প্রোডাক্ট রিভিউ কিওয়ার্ড থাকবে। যেমন - “আইফোন সেভেন প্লাস রিভিউ” একটা ইন্ডিভিজ্যুয়াল প্রোডাক্ট রিভিউ কিওয়ার্ড হতে পারে। এটা বাধ্যতামূলক কিছুনা। আমি এ জাতীয় কিওয়ার্ডের চাইতে ইনফরমেশনাল কিওয়ার্ড টার্গেটেড কন্টেন্ট বেশি দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। 

কোন ধরণের কিওয়ার্ড কি সেটা নিয়ে আর এই পোস্টে আলোচনা করবোনা। পরবর্তীতে কোন এক পোস্টে হয়তো আলোচনা করবো। আর কিভাবে নিশ আইডিয়া পাওয়া যায় তার জন্যে এই আর্টিকেল পড়তে পারেন। 

নিশ সাইট করা সবচেয়ে দারুণ উপায় অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্যে। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করে একটা সাইটে আপনি ফ্রিতেই গুগল থেকে বায়িং ট্রাফিক পেতে পারেন, যারা আপনার সাইট থেকে অ্যামাজনে গিয়ে প্রোডাক্ট কিনবে।

কিছু নিশ সাইটের এক্স্যাম্পল দেখতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন - ​

ইউটিউব

ইউটিউব এর মাধ্যমেও অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। আমাদের দেশে পপুলার না, তবে বাইরে অনেকেই করছে।

যদি কোয়ালিটি ভিডিও নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ইউটিউব এর মাধ্যমে অ্যামাজন এর কাজ না করাই ভালো। কারণ অ্যামাজন যখন চ্যানেল রিভিউ করবে, তখন যদি লো-কোয়ালিটি ভিডিওর কারণে একাউন্ট ব্যান করে দেয় তাহলে কিছু করার থাকবেনা।

তবে আপনি যদি নিজে ভয়েস অভার দিয়ে ভালোমানের ভিডিও তৈরী করতে পারেন বা নিজেই ক্যামেরার সামনে কথা বলতে পারেন, তাহলে ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম।

কিছু সফল ইউটিউব চ্যানেল যারা সফলভাবে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশনসহ আরও বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েশন করছে - ​(চ্যানেল না দিয়ে, একটা করে ভিডিও দিচ্ছি যেখানে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক আছে)

অ্যামাজন স্টোর

এ পদ্ধতিতে আপনার একটা ওয়েবসাইট থাকবে পুরোপুরি ই-কমার্স সাইটের মতো করে।

অ্যামাজনের প্রোডাক্টগুলোই আপনি এখানে দেখাতে পারবেন, জনগণ সাধারণ ই-কমার্স সাইটের মতোই প্রডাক্ট কার্টে নিতে পারবে। যখন পেমেন্ট পেইজে যাবে তখন তাকে অ্যামাজন এর পেমেন্ট পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে। সে সেখানে পেমেন্ট করে দিবে আর আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।

অ্যামাজন স্টোর টাই ওয়েবসাইটে মূলত পেইড ট্রাফিক নিয়ে কাজ করতে হয়। তাই পেইড টার্গেটিং এ বস না হলে এই টাইপ সাইট নিয়ে কাজ করা উচিৎ না।

এ জাতীয় সাইটের ব্যাপারে আমার ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স নেই, তাই খুব বেশি তথ্যও দিতে পারছিনা।

উপরের যে পদ্ধতিগুলো বললাম, তার মধ্যে নিশ সাইট করাই সবচেয়ে সহজ এবং দারুণ পদ্ধতি। আমি এভাবেই করি এবং ম্যাক্সিমাম অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এই পদ্ধতিতেই কাজ করে।

আমি প্রযুক্তিগিক ব্লগে আমার একটা নিশ সাইটের কেইস স্টাডি লিখেছি সংক্ষিপ্ত করে। ইতোপূর্বে পড়ে না থাকলে পড়ে দেখতে পারেন।

পরবর্তী পোস্টগুলোতে স্যাম্পল হিসেবে দেখার জন্যে আমি কিছু নিশ সাইট দিবো এবং পাশাপাশি একটা নিশ সাইট করতে প্রয়োজনীয় স্টেপগুলোও বিষদভাবে লিখবো।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সম্ভাবনা কেমন?

এটা খুবই ক্রিটিকাল প্রশ্ন এবং এই সেকশনটার জন্যেই অনেকে পুরো লেখাটা পড়ছেন। যদি গতানুগতিক মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মতো করে বলা যায়, তাহলে বলতে হয় “এখানে রয়েছে অপার সম্ভাবনা” :p

ভাওতাবাজি মার্কা কথা না, আসলেই। আপনি যদি প্রপার স্টাডি করে নির্ভুল কাজ করতে পারেন, এখান থেকে বেশ ভালো অংকের টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

আমি আপনাকে হাজার ডলারের স্বপ্ন দেখাবোনা। ২৫০-৩০০ ডলার হলেই আমাদের দেশের মানুষের নির্দ্বিধায় পোষাবে। কারও কারও ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি হতেই পারে। সেটাও এখানে সম্ভব।

কয়েকশো থেকে কয়েক হাজার ডলার অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশন করে আপনি নির্দ্বিধায় কামাতে পারবেন। এর জন্যে অবশ্যই পর্যাপ্ত পড়াশোনা করে নিতে হবে।

আর অবশ্যই ইনভেস্ট করার মানসিকতা থাকতে হবে। এটাকে রিয়েল ব্যবসা হিসেবে ট্রিট করতে হবে। তাই কিছু ইনভেস্টমেন্ট লাগবেই।

অন্ততপক্ষে ৬০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করতে হবে আপনাকে। কিছু কাজ এদিক সেদিক করে খরচ কমানো যেতে পারে, তারপরেও এমন একটা বাজেট আপনাকে রাখতে হবে।

যদি আপনি ইংরেজিতে ভালো হন এবং ইনভেস্টমেন্ট আপনার তেমন না থাকে, তাহলে কিভাবে মাত্র ১০০ ডলার বাজেটে নিশ সাইট তৈরী করা যায় তা নিয়ে আমার লেখা আর্টিকেলটা পড়তে পারেন। আশা করা যায় আপনি পর্যাপ্ত গাইডলাইন পেয়ে যাবেন।

আমি জানি, নতুন কেউ যদি এই আর্টিকেল পড়ে থাকেন, তাহলে আমি কেমন ইনকাম করি এমন একটা প্রশ্ন মাথায় আসবে। আমি কখনোই পাবলিকালি রিভিল করিনি আমি কেমন ইনকাম করি বা এমন কিছু। তবে আমার অনেকগুলো সাইটের মধ্যে একটার ইনকাম স্ক্রিনশট দিয়েছি একাধিকবার। লেটেস্টটা এখানে আছে।

এখানে যা দেয়া, সাইটের ইনকাম তার থেকেও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। 

তাই আমি কেমন আর্ন করি সেটা পাঠকের কল্পনাতেই বিরাজ করুক। মুখ ফুটে বলার দরকার নেই। আর অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশন ছাড়াও আমি টুকটাক আরও কিছু সোর্স থেকে কিছু পয়সা পাই।

আমি ছোটখাটো মার্কেটার। আমার থেকেও বাঘা বাঘা আরও অনেকেই আছেন, যারা আমার থেকে কয়েকগুণ ইনকাম করেন।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশনের আরেকটা মজা হচ্ছে আপনি আপনার নিশ সাইটকে চাইলেই বেশ বড় একটা অ্যামাউন্টে সেল করতে পারেন।

বিক্রির জন্যে বেশ কিছু মার্কেটপ্লেস আছে – যেমন – এমপায়ার ফ্লিপার্স, এফ ই ইন্টার্ন্যাশনাল, ফ্লিপ্পা ইত্যাদি।

আপনার সাইট গত ৩-৬ মাসে যা ইনকাম করেছে তার গড় করে ২০-৩০ দিয়ে গুণ করে যা দাম দাঁড়ায় আপনি তা দিয়ে সেল করতে পারবেন।

অর্থাৎ আপনার সাইট যদি মাসে ৩০০ ডলার ইনকাম করে, তাহলে আপনি ৬-১০ হাজার ডলারে আপনার সাইট সেল করতে পারবেন। তবে এখানে আরও বেশ কিছু বিষয়ের উপর দাম নির্ভর করে, যেমন – সাইটের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সাইট মেইনটেইনেন্স বাবদ খরচ, ব্যাকলিঙ্ক স্ট্র্যাটেজিতে পিবিএন ছিল কিনা ইত্যাদি।

তারপরেও আপনি সাইট বিক্রি করলে পরবর্তী অন্তত ২০ মাসে ইনকাম একবারে হাতে পেয়ে যাবেন। নির্দ্বিধায় যা আপনাকে আরও বড় পরিসরে কাজ করার জন্যে বিশাল একটা এমাউন্টের ইনভেস্টমেন্ট দিয়ে দিবে। তাছাড়া আপনার অনেক শখ, চাহিদা, ইচ্ছা পূরণেও কাজে লাগাতে পারেন।

কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে চলে আসবো আপনার কাছে। ​যতো বেশি শেয়ার হবে, ততো বেশি আগ্রহ আসবে নতুন আর্টিকেলের জন্যে :mrgreen:

Ariful Islam Palash
 

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। টুকটাক লেখালেখির পাশাপাশি বই পড়া, নতুন জিনিস জানার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে তার। ব্যবসার প্রতি মনের টান রয়েছে, ভবিষ্যতে দেশের অন্যতম একজন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় নিজেকে। প্রয়োজনে ফেসবুকে পলাশ এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। :)